বুড়ো শিবের মন্দির

বুড়ো শিবের মন্দির

বুড়োশিব মন্দির Old shiva temple নবদ্বীপ শহরের একটি দ্বিশতাধিক প্রাচীন শিব মন্দির। বাংলার মন্দির স্থাপত্য রীতির নবরত্ন ধারায় মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে। নবদ্বীপের বুড়োশিবতলায় মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি দ্বিশতাধিক প্রাচীন হলেও শিব মূর্তিটি আরো বেশি প্রাচীনত্বের স্মৃতি বহন করছে।

বুড়োশিবের আদি প্রাচীন মন্দিরটি নবদ্বীপ পৌরসভার প্রথম কমিটির সদস্য কৃষ্ণকান্ত শিরোমণি ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তারাপ্রসন্ন চূড়ামণির প্রচেষ্টায় বর্তমান "নবরত্ন' মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দিরগাত্রের উৎকীর্ত ফলক থেকে জানা যায় যে মন্দিরটি ১৩১৬ বঙ্গাব্দে সংস্কৃত হয়।

নবদ্বীপের প্রবীণ নাগরিকদের কাছ থেকে জানা যায় যে, মন্দিরের বারান্দা এবং চূড়াগুলির নির্মাণ ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে হলেও গর্ভগৃহটি প্রাচীন, পাতলা টালি ইটের নির্মিত। মন্দিরে বুড়োশিব ছাড়াও কষ্টিপাথর নির্মিত দশভুজা মহিষাসুরমর্দিনী, প্রস্তর নির্মিত গণেশ মূর্তি, সূর্য নামে পরিচিত ক্ষুদ্র স্ফটিক খণ্ড ও তামার মঙ্গলচণ্ডী বিগ্রহ ছিল।১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে মহিষাসুরমর্দিনী বিগ্রহটি মন্দির থেকে অপহৃত হয়।

নবদ্বীপের বুড়োশিব মন্দিরটি প্রায় দ্বিশতাধিক প্রাচীন। তবে বুড়োশিব মূর্তিটি আরো অনেক পুরোনো। মনে করা হয় যে, সপ্তদশ শতকে বুড়োশিব মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। অষ্টাদশ শতকে রচিত কিছু গ্রন্থে এই বুড়োশিবের উল্লেখ পাওয়া যায়। অষ্টাদশ শতকে রচিত 'শ্রীশ্রীগৌরচরিত চিন্তামণি' গ্রন্থে সুস্পষ্টভাবে বুড়োশিবের কথা আছে।

ফলে সুস্পষ্টভাবে বলাই যায় যে বুড়োশিব নবদ্বীপে প্রায় ৩০০-৩৫০ বছর ধরে পূজিত হয়ে চলেছে। পূর্বে নবদ্বীপের পোড়ামাতলায় শিবের বিয়ে হত। বাসন্তীপুজোর দশমীর ভোরে বুড়োশিব আর যোগনাথ শিবের জোড়া বিয়ে হত। এখনো বিয়ের যাবতীয় রীতিনীতি মেনে বুড়োশিবের বিয়ে সম্পন্ন হয়।