কাশীপুর এর ইতিহাস

কাশীপুর হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা শহরের উত্তরাঞ্চলের একটি এলাকা। এটি কলকাতার একটি প্রাচীন জনবসতি। অঞ্চলটি কাশীপুর থানার অধীনস্থ। কাশীপুর-বেলগাছিয়া বিধানসভা কেন্দ্র এই অঞ্চলের বিধানসভা কেন্দ্র।১৭১৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়রের কাছ থেকে তাদের কুঠি-সংলগ্ন আটত্রিশটি গ্রামের রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করে।
এগুলির মধ্যে পাঁচটি গ্রাম হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে অধুনা হাওড়া জেলার ভূখণ্ডের অন্তর্গত ছিল। বাকি তেত্রিশটি গ্রাম ছিল কলকাতার দিকে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার পতনের পর ১৭৫৮ সালে কোম্পানি মিরজাফরের থেকে গ্রামগুলি কিনে নিয়ে পুনর্গঠিত করে। এই গ্রামগুলি একত্রে পরিচিত ছিল "ডিহি-পঞ্চান্নগ্রাম" নামে।
কাশীপুর ছিল এই গ্রামগুলিরই অন্যতম। মারাঠা খাতের সীমানার বাইরে অবস্থিত এই অঞ্চলটিকে সেই সময় শহরতলি এলাকা হিসাবে গণ্য করা হত।এইচ. ই. এ. কটন লিখেছেন, "কাশীপু্রের তীরবর্তী অংশটি নদীর তীরবর্তী সবচেয়ে সুন্দর অংশগুলির অন্যতম। এইখানে অনেকগুলি বাগানবাড়ি অবস্থিত। সেই যুগেই কাশীপুর একটি শিল্পাঞ্চল হিসাবে গড়ে ওঠে।
এখানে স্থাপিত হয় গভর্নমেন্ট গান ফাউন্ড্রি, স্নাইডার ও রাইফেল শেল কারখানা এবং একাধিক চিনিকল ও চটকল।১৮৮৮ সালে এন্টালি, মানিকতলা, বেলগাছিয়া, উল্টোডাঙা, চিৎপুর, কাশীপুর, বেনিয়াপুকুরের কিয়দংশ, বালিগঞ্জ, ওয়াটগঞ্জ, একবালপুর এবং গার্ডেনরিচ ও টালিগঞ্জের কিয়দংশ কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়। গার্ডেনরিচ এলাকাটিকে পরে কলকাতা থেকে আলাদা করা হয়েছিল।
কলকাতা পৌরসংস্থার ১ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত কাশীপুর এবং ২ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত সিঁথি অঞ্চল কাশীপুর থানার অন্তর্গত। ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে, এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ৯৬,০৪৩। এর মধ্যে ৫১,৪০১ জন পুরুষ ও ৪৪,৬৪২ জন মহিলা। এই অঞ্চলের দশকীয় বৃদ্ধির হার নেতিবাচক। ৬ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত চিৎপুর অঞ্চলের কিছু অংশ কাশীপুর থানার অন্তর্গত।