সাংবাদিককে না পেয়ে তাঁর আত্মীয়কে খুন করল তালিবান

সাংবাদিককে না পেয়ে তাঁর আত্মীয়কে খুন করল তালিবান

কাবুল দখল করার পরে তালিবান ঘোষণা করেছিল, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে। কিন্তু শুক্রবার জানা গেল, জার্মান সংবাদ মাধ্যমের এক সাংবাদিকের আত্মীয়কে খুন করেছে তারা। 'ডয়েছে ওয়েলে' নামে ওই সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিককে খুন করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তাঁকে না পেয়ে জঙ্গিরা তাঁর বাড়ির লোকজনের ওপরে গুলি চালায়। তাতে একজন মৃত ও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ডয়েচে ওয়েলে জানিয়েছে, সাংবাদিকের সন্ধানে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। জার্মান সংবাদ মাধ্যমের ডিরেক্টর জেনারেল পিটার লিমবোর্গ ওই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে বলেন, এই ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে সাংবাদিকদের কীরকম ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তাঁর কথায়, 'আমাদের এক সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তালিবানের হাতে খুন হয়েছেন।

আফগানিস্তানে আমাদের সাংবাদিকরা তো বটেই, তাঁদের বাড়ির লোকজনও এখন খুবই বিপদের মধ্যে আছেন।' পরে পিটার জানান, তালিবান এখন সাংবাদিকদের সন্ধানে কাবুলে ও অন্যত্র খুব পরিকল্পিতভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে। তারা ওই জার্মান সংবাদ মাধ্যমের অন্তত তিনজন সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়েছিল। এর আগে সিএনএনের রিপোর্টার ক্ল্যারিসা ওয়ার্ড কাবুল থেকে বলেন, 'আমি এর আগেও অনেক বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রিপোর্টিং করেছি। কিন্তু বর্তমানে আফগানিস্তানে যা চলছে, তার তুলনা হয় না।

' সিএনএনের প্রধান আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা ক্ল্যারিসা বুধবার জানান, কাবুল বিমান বন্দরের কাছে বিরাট গোলমাল শুরু হয়েছে। দেশ থেকে বেরোনর জন্য মরিয়া চেষ্টা করছেন অনেকে। এক তালিবান যোদ্ধা ক্ল্যারিসাকে বলে, আপনি মুখ ঢাকুন। না হলে আপনার সঙ্গে কথা বলব না। ওই যোদ্ধার হাতে ছিল একটা চেন আর তালা। একসময় সিএনএনের প্রোডিউসার ব্রেন্ট সোয়াইলসের দিকে পিস্তল হাতে তেড়ে এসেছিল দুই জঙ্গি। অপর এক তালিবান সেই দু'জনকে থামায়। সে বলে, সাংবাদিকদের মেরো না।

ক্ল্যারিসা বলেছেন, 'পরিস্থিতি খুব ঘোরালো। যে কোনও সময় বড় বিপদ ঘটতে পারে। কাবুলে আরও বেশি মানুষ হতাহত হতে পারত।' টেক্সাসের রিপাবলিকান সেনেটর টেড ক্রুজ এদিন ক্ল্যারিসার সোমবারের রিপোর্টের একাংশ টুইট করেছেন। তাতে ক্ল্যারিসা দেখিয়েছেন, কাবুলের রাস্তায় অনেকে 'আমেরিকা মুর্দাবাদ' বলে চিত্‍কার করছে। যদিও তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি। সিএনএনের ছবিতে দেখা যায়, ক্ল্যারিসাকে মাথা ঢেকে কাবুলের রাস্তায় বেরোতে হয়েছে।

মিসৌরির রিপাবলিকান নেতা ভিকি হার্তজলার মন্তব্য করেন, ক্ল্যারিসার ছবি দেখেই বোঝা যায়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অপদার্থতা আগামী দিনে আফগান মেয়েদের কী বিপদের মধ্যে ফেলবে। চলতি সপ্তাহে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে এক সাক্ষাত্‍কারে ক্ল্যারিসা বলেন, 'আমাকে রাস্তায় বেরোতে হয়। মানুষ কী ভাবছে আমি জানার চেষ্টা করি। আমি যখন রাস্তায় বেরোই, তখন স্থানীয় রীতিনীতি মানতেই হয়।'