ইটভাটার জীবন চালাতে হবে না সঙ্গীতাকে, কথা দিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী

ইটভাটার জীবন চালাতে হবে না সঙ্গীতাকে, কথা দিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী

এটাই ভারতবর্ষ। এদেশে ক্রিকেট ছাড়া আর কোনও খেলার মূল্য নেই। প্রতিভা, দক্ষতা সব মূল্যহীন হয়ে পড়ে কিছু কিছু সময়। যখন সময় থমকে দাঁড়ায় তখন অনেক অভাবী ফুটবলারদের অবস্থা দিন আনা, দিন খাওয়ার মত হয়। এমনিতেই তন্ময় ঘোষ নামক এক বাঙালি ফুটবলার আর্থিক অভাবে ভুগছেন। কলকাতার তিন প্রধান খেলা সত্ত্বেও চাকরি জোটেনি। এরকম ঘটনা যে কত জনের সঙ্গে ঘটেছে ইয়াত্তা নেই। ঠিক এরকমই অভাবের তাড়নায় ইট ভাটায় কাজ করছিলেন মহিলা ফুটবলার সঙ্গীতা সোরেন। রবিবার এই খবর ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ফুটবলমহলে।

অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্য করতে চেয়েছেন। এর মধ্যেই সঙ্গীতাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুও। জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই সঙ্গীতাকে অর্থসাহায্য করা হবে। ভারতীয় মহিলা দলের হয়ে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন তিনি। ভুটান এবং তাইল্যান্ডে গিয়েও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। জাতীয় দলে ডাক পাওয়া সময়ের অপেক্ষা ছিল। তার আগে এসে হাজির হয় অতিমারি। অভাবী পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে আসরে নামতে হয় সঙ্গীতাকে।

ইট ভাটায় কাজ করতে শুরু করেন তিনি। বাবা দৃষ্টিশক্তিহীন। সঙ্গীতা নিজের ভাইয়ের সঙ্গে ইট ভাটায় কাজ করেন। তবুও অভাবের মধ্যেও ফুটবলপ্রেম কমেনি। যতটা পেরেছেন অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছেন। কয়েক মাস আগে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কাছে সাহায্য চেয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কানে কথা পৌঁছয়নি। এবার অবশ্য মহিলা সমিতি খুব সাহায্য করেছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন এবং ঝাড়খন্ড সরকারের কাছে সঙ্গীতার কাহিনী তুলে ধরতে।

রবিবার খবর পেয়েই দেশের ক্রীড়া মন্ত্রী কিরণ রিজিজু টুইট করেন, 'সঙ্গীতা সোরেনের কথা আমি জানতে পেরেছি। অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করেছে ও। এই মুহূর্তে অতিমারিতে অর্থকষ্টে ভুগছে। আমার দফতরের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাঁর কাছে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে যাবে। খেলোয়াড়দের সম্মান নিয়ে বাঁচতে দেওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।'সঙ্গীতা অবশ্য মনে করেন তিনি যে পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাতে এতদিনে তাঁর একটা সরকারি চাকরি পাওয়া উচিত ছিল। তবে ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে। ' বেগার্স আর নট চুসর্স ' । শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তব সত্যি। সঙ্গীতার কপাল তবু ভাল। এরকম কতজন ক্রীড়াবিদ আর্থিক অভাবে ভুগছেন জানা নেই।