রাধামোহন ভট্টাচার্য এর জীবনী

রাধামোহন ভট্টাচার্য Radhamohan Bhattacharya ছিলেন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র ও মঞ্চ অভিনেতা ও সিনেমা সমালোচক, বহু ভাষাবিদ। ধ্রুপদী সংগীতে ব্যুৎপত্তি সহ সেতার, এস্রাজ বাজাতে পারদর্শী ছিলেন। আবৃত্তিকার হিসাবে তার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল।
রাধামোহনের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে সেপ্টেম্বর মাসে ১৯০৮ সালে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থশাস্ত্রের কৃতি ছাত্র ছিলেন। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে জ্যোতির্ময় রায়ের উদয়ের পথে ছায়াছবিতে আদর্শবাদী নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হন।
এর আগে অবশ্য ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে 'অপরাধ' ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় এবং হিন্দি ছবি 'তমন্না' য় অভিনয় করেছেন। ছবিতে যেকোনো চরিত্রে তিনি ছিলেন সাবলীল। অসম্ভব প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন তিনি। ছবিতে অভিনেতা হিসাবে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে "গিরিশ থিয়েটারে" 'ডাউন ট্রেন' নাটকে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ মঞ্চাভিনেতার পুরস্কার পান।
ইংরাজী দৈনিক "স্টেটসম্যান" পত্রিকায় সংগীত-সিনেমা সমালোচক হিসাবে কাজ করেছেন। ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের উপর তার লেখাও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হত। রাধামোহন রুশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষা শিখেছিলেন। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি মস্কো যান ইংরাজী থেকে রুশ সাহিত্য বাংলায় অনুবাদ করার জন্য। রুশ গ্রন্থ 'খোঁড়া রাজকুমার' ও 'মুমু' বাংলায় অনুবাদ করেন।
রাধামোহন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সদস্য ও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষণাপত্রের পরীক্ষক ছিলেন। এছাড়া তিনি শিল্পী সংসদের পৃষ্ঠপোষক এবং কিছুকাল অভিনেতৃসংঘের সভাপতি ছিলেন।তার কয়েকটি অভিনীত চলচ্চিত্র হল- অপরাধ','উদয়ের পথে','হামরাহী','অভিযাত্রী',' স্বর্ণসীতা','মানদণ্ড','জীবনসৈকত','শঙ্খবাণী' ,'আঁধি', 'জালিয়াত','কাবুলিওয়ালা','ক্ষণিকের অতিথি' ইত্যাদি।অকৃতদার প্রতিভাবান অভিনেতা রাধামোহন ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ই জানুয়ারি কলকাতায় পরলোক গমন করেন।