কেরলে পণপ্রথার বিরুদ্ধে অনশনে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান

রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপালদের নানা কাজকর্মে ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে তাঁদের খটাখটি, সংঘাত লেগেই থাকে। পশ্চিমবঙ্গে যেমন তৃণমূল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের হাজারো ইস্যুতে ঝামেলা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান এমন একটি ইস্যুতে সরব হলেন, যা আপত্তি তোলার বিষয়ই নয়।
বিয়েতে পণের আদানপ্রদানের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে সকাল আটটা থেকে নিজের সরকারি বাসভবনে অনশনে বসেছেন। এর পাশাপাশি বিকালে গাঁধী ভবনে বিভিন্ন গাঁধীবাদী সংগঠন আয়োজিত অনশন কর্মসূচিতেও থাকবেন তিনি। বিকাল সাড়ে চারটে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। রাজভবনের কর্মসূচি বিকাল চারটেয় শেষ করে গাঁধী ভবনের প্রতিবাদ সভায় যাবেন তিনি।
এই প্রথম দেশের কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল এধরনের সমস্যা নিয়ে সক্রিয় হলেন। কেরলে পণের দাবিতে অত্যাচার সইতে না পেরে একাধিক মহিলার আত্মহত্যা রাজ্যপালকে কষ্ট দিয়েছে। গত মাসে তিনি এই কুপ্রথার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকা পালন করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এমনকী গত মাসে আয়ুর্বেদ চিকিত্সার ছাত্রী স্বামী বিস্ময়া যৌতুক হিসাবে দামি গাড়ির দাবি না মেটায় অত্যাচারের জেরে আত্মঘাতী হওয়ার পর তাঁদের কোল্লামের বাড়ি গিয়েও সমবেদনা জানিয়েছিলেন আরিফ খান।
বলেছিলেন, পণের আদানপ্রদানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি জোর জনমত তৈরি করুক। তিনিও তাতে সামিল হতে তৈরি। তিনি বলেছিলেন, পণ একটা কুপ্রথা। এর বিরুদ্ধে চলতি আইন যথেষ্ট কঠোর, প্রয়োজন এর বিরুদ্ধে জনমানসে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা। গত মাসে কেরলে একাধিক পণের জন্য মানসিক, শারীরিক নির্যাতন, হেনস্থার খবর সামনে আসে, যাতে বাধ্য হয়ে নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
এক মহিলা আইপিএস অফিসারকে এধরনের সব কেস মোকাবিলায় ইনচার্জ করেন। রাজ্যপাল বলেছেন, আমাদের প্রিয় রাজ্য কেরল সম্প্রতি একটি মেয়ের ভয়াবহ পণপ্রথার বলি হওয়ার ঘটনার শিরোনামে। এটা দুঃখজনক যে, গোটা বিশ্বে স্বাক্ষরতা, গড় আয়ুর মতো সামাজিক সূচকের ক্ষেত্রে প্রশংসিত কেরলে পণপ্রথার মতো ব্যাধি বহাল রয়েছে। মহাত্মা গাঁধী বলেছিলেন, কোনও তরুণ বিয়ের সঙ্গে পণের শর্ত জুড়ে দিলে তা তার শিক্ষা, দেশ ও নারীত্বের অপমান। এ প্রসঙ্গে কেরল সরকারের নেওয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন তিনি।