বিনোদ ঘোষাল এর জীবনী

বিনোদ ঘোষাল এর জীবনী

বিনোদ ঘোষাল সাহিত্য অকাদেমি যুব পুরস্কারপ্রাপ্ত বাঙালি সাহিত্যিক।বিনোদ ঘোষালের জন্ম ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কোন্নগরে নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে। পিতার নাম কৃষ্ণ গোপাল ঘোষাল ও মাতা অর্চনা ঘোষাল। ছোট থেকে মাঠ-ঘাট পুকুর, জঙ্গল প্রকৃতির সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা। পিতা ছিলেন পরম বৈষ্ণব।

শ্রীকৃষ্ণ- চৈতন্য অন্তপ্রাণ। বাড়িতে গভীর অনুভবী পিতার সাহচর্য তাকে খুব অল্পবয়স হতেই শিল্প-সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। ছবি আঁকা, এবং অভিনয় ছিল তার জন্মগত প্রতিভা। কিন্তু পিতার মতই বাউণ্ডলে জীবন। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত পিতা গত হবার পর অল্প বয়েসেই সংসারের হাল ধরতে কর্মজীবনের শুরু। কিন্তু কোনও চাকরিতেই মন বসে না।

বিচিত্র কর্মজীবন তার। কখনও প্রাইভেট টিউটর, কখনও বড়বাজারের গদিতে খাতা লেখা লেখা, বিস্কুট কারখানায় সুপারভাইজারি, শিল্পপতির বাড়ির বাজারসরকার আবার কখনও কর্পোরেট হাউজে এ্যাকাউন্টেন্ট, সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা। এইসবের পাশাপাশি চলছিল সাহি্ত্যচর্চা। অর্থরোজগারের জন্য বহু বিচিত্র কাজে জড়িয়ে পড়ার পর সব ছেড়ে দিয়ে অবশেষে তিনি লেখালেখিকেই একমাত্র পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

ছোটগল্প, উপন্যাস, ফিচার, নাটক, চলচ্চিত্র সমালোচনা তার লেখালেখির বিষয়। দেশ পত্রিকাতে বিনোদ ঘোষালের লেখা প্রথম গল্প একটু জীবনের বর্ণনা প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে।গল্পটি পাঠকমহলে বিশেষ সাড়া ফেলে। তারপর থেকে তিনি নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন। মাঝরাস্তায় কয়েকজন তার রচিত প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে।

তার লেখা একাধিক ছোটগল্পের নাট্যরূপ মঞ্চে ও বেতারে উপস্থাপিত হয়েছে। তার উপন্যাসকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র। একাধিক ভাষায় অনুদিত হয়েছে তার ছোট গল্প। কাজী নজরুল ইসলামের সমগ্র জীবনকে ভিত্তি করে লেখা তার দীর্ঘ উপন্যাস কে বাজায় বাঁশি একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিনোদ ঘোষাল ২০১১ সালে তার ডানাওলা মানুষ গল্প গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য একাডেমি যুব পুরস্কার। ২০১৪ সালে তিনি নতুন গল্প ২৫ বইটির জন্য পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমির সোমেন চন্দ স্মৃতি পুরস্কার পান।এছাড়াও তিনি পূর্বভারত পুরস্কার, মিত্র ও ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার, শৈলজানন্দ পুরস্কারে সম্মানীত হয়েছেন।

সানডে টাইমস কলকাতার পক্ষ হতে মাননীয় রাজ্যপালের কাছ থেকে 'সেরা সাহিত্যিক ২০২০' সম্মান লাভ করেছেন। দেশের বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের সাহিত্য উৎসবে বাঙালি লেখক প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি মাননীয় ভারতের রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতিভবনে 'রাইটার্স ইন রেসিডেন্স প্রোগ্রামে' যোগদান করেন। অর্জন করেছেন ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রকের ফেলোশিপ।২০২০ সালে মাননীয় রাজ্যপালের কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন বর্ষসেরা সাহিত্যিকের সম্মান।