অমিয় ভূষণ চক্রবর্তী এর জীবনী

অমিয় ভূষণ চক্রবর্তী এর জীবনী

অমিয়ভূষণ মজুমদার  Amiyabhusan Chakrabarti  ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক এবং নাট্যকার। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তার সাহিত্যকর্ম ব্যাপ্ত ছিল। তার সাহিত্য সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর রাজনগর উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছেন।

অমিয়ভূষণ ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মার্চ কোচবিহারে তার মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাবু অনন্তভূষণ মজুমদার ছিলেন বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলার পাকশির জমিদার। তাদের পরিবারের আসল পদবি ছিল 'বাগচি' আর তারা ছিলেন জাতিতে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ। অমিয়ভূষনের মাতা ছিলেন জ্যোতিরিন্দু দেবী আর তার মাতামহী ছিলেন কোচবিহারের রানী সুনীতী দেবীর বান্ধবী। ফলে সনাতন ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মেও জ্যোতিরিন্দু দেবী ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। অমিয়ভূষণরা ছিলেন পাঁচ ভাই আর দুই বোন। দুই বোন ছিলেন তার থেকে বড়। আর ভাইদের মধ্যে অমিয়ভূষণ ছিলেন বড়।

অমিয়ভূষণ মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের সাম্মানিক স্নাতক হলেও গণিত, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল, সংস্কৃত এবং আইনশাস্ত্রে দক্ষ ছিলেন। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজি সাহিত্যের সাম্মানিকের ছাত্র হিসাবে কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছু মাসের মধ্যেই তিনি কোচবিহারে ফিরে আসতে বাধ্য হন। এরপর তিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন।

১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে ডিগ্রি হাতে পাওয়ার পর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রথাগত পড়াশোনা বন্ধ করে কোচবিহার মুখ্য ডাকঘরে গ্র্যাজুয়েট করণিক হিসাবে যোগ দেন পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য।অমিয়ভূষণ মজুমদারের প্রথম প্রকাশিত রচনা হল 'দ্য গড অন মাউন্ট সিনাই' নামের একটি নাটক। এটি মন্দিরা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪০ এর দশকে।

১৯৪৫-এ তিনি প্রথম গল্প রচনা করেন যার নাম ছিল 'প্রমীলার বিয়ে'। তার প্রথম উপন্যাস 'গড় শ্রীখণ্ড'। এটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল সঞ্জয় ভট্টাচার্য সম্পাদিত পূর্বাশা পত্রিকায় ১৩৬০ বঙ্গাব্দের জৈষ্ঠ সংখ্যা থেকে। পরে উপন্যাসটি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে বই আকারে প্রকাশিত হয়। ভারতের স্বাধীনতার আগে পরের সময়কালে পদ্মাপারের পটভূমিকায় রচিত হয়েছিল এই উপন্যাসটি। ৮ ই জুলাই ২০০১ সালে ৮৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই মহান মানুষটি।