নবদ্বীপের অনুমহাপ্রভু মন্দির

নবদ্বীপের অনুমহাপ্রভু মন্দির

অনুমহাপ্রভু মন্দির নবদ্বীপের মনিপুর রাজবাড়ির মন্দির। মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের কন্যা বিম্বাবতী দেবীর সেবিত বিগ্রহ এখানে পূজিত হয়। মন্দিরটি নবদ্বীপ শহরের দক্ষিণে মনিপুর রাজবাড়ীতে অবস্থিত।অনু মহাপ্রভু মন্দিরের প্রাচীন মূর্তিটি ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে মনিপুর রাজ ভাগ্যচন্দ্র নবদ্বীপে নিয়ে এসেছিলেন। মহারাজ চৌরজিৎ সিংহ ১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দে এখানে একটি মন্দির নির্মাণ করেন।

১৩২৭ বঙ্গাব্দ এই নির্মিত হয়। তখন একটি সমতল ছাদের মন্দির তৈরি করা হয়। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরের চূড়া ও শিখর নির্মাণ হয়।মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের কন্যা বিম্বাবতী দেবীর সেবিত বিগ্রহ এখানে পূজিত হয়। কাঁঠাল কাঠ নির্মিত অপরূপ এই অনুমহাপ্রভুর মূর্তির নির্মাণ শৈলীতে মণিপুরী শৈলীর প্রভাব সুস্পষ্ট।

এছাড়াও অষ্টাদশ শতাব্দীতে মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের শাসনামলে তার কন্যা বিম্বাবতী দেবীর বিশেষ উদ্যোগে সিলেটে রাসেশ্বরী পালার সূচনা করেন।নবদ্বীপের মণিপুর রাজবাড়ির রথ প্রায় তিন শতাব্দী ধরে পালন হচ্ছে। মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্র সিংহ ১৭৯৭ সালে নবদ্বীপে আসেন। তার কন্যা বিম্বাবতী মঞ্জরি মহাপ্রভু দর্শনের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন।

এরপর রাজা ভাগ্যচন্দ্রের মৃত্যুর পর কুমার চৌরজি সিংহ বোন বিম্বাবতী মঞ্জরীর ইচ্ছানুসারে নবদ্বীপে বসতি স্থাপন করেন। তারপর ১৮০৫ থেকে নবদ্বীপে মণিপুর রাজবাড়ির রথের সূচনা হয়। রাজবাড়ির চারটি মন্দির ঘুরে রথ পুনরায় রাজবাড়িতেই ফিরে আসে। মাসির বাড়ির প্রথা এখানে নেই। তবে উল্টোরথ পর্যন্ত প্রতি সন্ধ্যায় উৎসব হয়।

মণিপুরী নাচের সঙ্গে জয়দেবের পদ গেয়ে জগন্নাথের সন্ধ্যারতি এই রথযাত্রার স্বতন্ত্র ঐতিহ্য।মণিপুর রথের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো এই রথ যাত্রাপথে বিভিন্ন ভক্তের বাড়িতে থামে এবং সেই বাড়ির তরফ থেকে জগন্নাথকে আরতি করা হয় এবং তার ভোগ দেওয়া হয়।